ডেস্ক নিউজ : আদালত অবমাননার দায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কুমিল্লার সাবেক মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) সোহেল রানার আপিলের শুনানি আগামী ৫ ডিসেম্বর। সে পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ অব্যাহত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রাফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ খান।
আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সঙ্গে নিঃশর্ত ক্ষমার একটি আবেদনও রয়েছে।’সোহেল রানা বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা হিসেবে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আছেন।ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১(ক) ধারা অনুসারে ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল) সংক্রান্ত একটি মামলার কার্যক্রম ২০১৯ সালের ৬ মার্চ স্থগিত করেন হাইকোর্ট।রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কুমিল্লার তখনকার সিজিএম সোহেল রানা সে স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে গত ১০ এপ্রিল মামলাটির অভিযোগ গঠন করেন। শুধু অভিযোগ গঠন করেই ক্ষান্ত ছিলেন না, এ মামলায় একাধিক আদেশও দেন তিনি।
মামলার এক আসামি বিষয়টি নজরে আনার পর গত ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট তাঁর এসব কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা চান।২১ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে তাঁকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ওই দিন তিনি আদালতে হাজির হলেও পরে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ব্যাখ্যা দাখিল করেন। কিন্তু লিখিত ব্যাখ্যার ভাষা আদালতের কাছে সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার স্বপ্রণোদিত রুল জারি করেন। আর ৯ অক্টোবর তাঁকে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুল জারির পর সোহেল রানা মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করে হাইকোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
গত ১২ অক্টোবর নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন গ্রহণ না করে উচ্চ আদালত তাঁকে সাজা দেন। আদালত অবমাননার দায়ে তাঁকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সাত দিনের মধ্যে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজিএম) আদালতে সোহেল রানাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২-ক) ধারা অনুসারে এক বছরের কম সাজা হলে সংশ্লিষ্ট আদালত দণ্ডিতের জামিন মঞ্জুর করতে পারেন। সে বিধান অনুসারে আদেশের পরপরই হাইকোর্টের ওই বেঞ্চেই জামিন আবেদন করেন সোহেল রানা। রায়ের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দেন।
জামিন নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন সোহেল রানা। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে ২০ নভেম্বর শুনানির তারিখ রাখেন। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে মঙ্গলবার সে আপিল শুনানিতে ওঠে।
কিউটিভি/আয়শা/২১ নভেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৪:২১