
ডেস্ক নিউজ : বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশ করা হয়। দৃষ্টিভঙ্গিভেদে লাভ-ক্ষতির হিসাবও ভিন্ন ভিন্ন হয়। পবিত্র কোরআনেও ক্ষতির হিসাব বা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে—নিম্নে সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো—
যারা ইসলামকে দ্বিন হিসেবে মনে-প্রাণে গ্রহণ করেনি
প্রকৃত সফলতা আখিরাতের সফলতা। যার পূর্বশর্ত হলো, ঈমান।
যারা ঈমান আনবে এবং ইসলামকে একমাত্র দ্বিন হিসেবে মনে-প্রাণে গ্রহণ করবে, তারাই সফল হবে। যারা তা ত্যাগ করবে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তিই ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বিন অবলম্বন করতে চাইবে, তার থেকে সে দ্বিন কবুল করা হবে না। এবং আখিরাতে সে মহা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)
রাসুল (সা.)-তো আরো স্পষ্ট বলেছেন, সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন, এ উম্মতের যে কেউ ইহুদি হোক বা খ্রিস্টান, যে আমার কথা শুনবে অতঃপর আমি যে রিসালাত নিয়ে এসেছি তার প্রতি ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করবে নিশ্চয়ই সে জাহান্নামের অধিবাসী হবে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২৭৯)
শয়তানকে যারা বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে
শয়তান মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। শয়তান সর্বদা মানুষকে জাহান্নামের পথে পরিচালিত করার পাঁয়তারা করে। যারা শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর সে (আল্লাহকে) বলেছিল, আমি তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্ধারিত এক অংশকে নিয়ে নেব। এবং আমি তাদের সরল পথ থেকে নিশ্চিতভাবে বিচ্যুত করব, তাদের (অনেক) আশা-ভরসা দেব এবং তাদের আদেশ করব, ফলে তারা চতুষ্পদ জন্তুর কান চিরে ফেলবে এবং তাদের আদেশ করব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে বন্ধু বানায়, সে সুস্পষ্ট ক্ষতির মধ্যে পড়ে যায়। (সুরা নিসা, আয়াত : ১১৮-১১৯)
যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে
প্রত্যেক মুসলমান আল্লাহর সঙ্গে কিছু প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারবদ্ধ। এটা এই মর্মে যে আল্লাহর আদেশ পালন করবে এবং তাঁর নিষেধ মেনে চলবে। এই প্রতিশ্রুতি যারা ভঙ্গ করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সে সব লোক, যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি পরিপক্ব করার পরও ভেঙে ফেলে এবং যে সম্পর্ক রক্ষা করতে তিনি আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তার করে; বস্তুত এমন সব লোকই অতি ক্ষতিগ্রস্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭)
কিয়ামতে অবিশ্বাসী
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়াকে অস্বীকার করেছে, নিশ্চয়ই তারা অতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবশেষে কিয়ামত যখন অকস্মাৎ তাদের সামনে এসে পড়বে তখন তারা বলবে, হায় আফসোস! আমরা এ (কিয়ামত) সম্পর্কে বড় অবহেলা করেছি এবং তারা (তখন) তাদের পিঠে নিজেদের পাপের বোঝা বহন করবে। সাবধান! তারা যা বহন করবে তা অতি নিকৃষ্ট। ’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৩১)
যারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে দুনিয়াকে প্রাধান্য দেয়
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘বলে দাও, আমি কি তোমাদের বলে দেব, কর্মে কারা সর্বাপেক্ষা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত? তারা সেই সব লোক, পার্থিব জীবনে যাদের সমস্ত দৌড়-ঝাপ সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, অথচ তারা মনে করে তারা খুবই ভালো কাজ করছে। ’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ১০৩-১০৪)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে যাবতীয় অকল্যাণের পথ পরিহার করে তাঁর সন্তুষ্টি মোতাবেক চলার তাওফিক দান করুন।
কিউটিভি/আয়শা/০৫ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৪:০৮






