
রৌমারী,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রাম-৪ আসনে যে সকল কারনে বিএনপি’র ঘোষিত প্রার্থী আজিজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল চায় বিএনপি দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারগন। সুনির্দিষ্ট কারণে আজিজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিলের লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার সর্বত্র ব্যাপক ভাবে আলোচিত হচ্ছে।
এ কারণে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তৃণমুল পর্যায়ের হাজারো নেতা-কর্মী। সর্বত্র বিএনপির প্রার্থিতা বাতিলের জোরালো বক্তব্য তুলে ধরছেন এলাকাবাসী।
কুড়িগ্রাম-৪ আসন (রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী) উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ ব্যানারে বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার শাপলা চত্ত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলটি বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় শাপলা চত্ত্বরে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় সমাবেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মী অনতিবিলম্বে জনবিচ্ছিন্ন নেতা আজিজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান এবং নেতা-কর্মীদের আস্থার প্রতীক মমতাজ হোসেন লিপিকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার জোরালো দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, রৌমারী উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবু, রৌমারী উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহ্বায়ক রুবেল হোসেন, বন্দবেড় ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি রমিজ উদ্দিন এবং রৌমারী সদর ইউনিয়নের মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আয়শা বেগম।
বক্তারা বলেন, আমরা ধানের শীষে ভোট দিবো এবং ধানের শীষের পক্ষে মাঠে কাজ করে যাবো। তাই মহিলা দলের নেত্রী মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী মমতাজ হোসেন লিপিকে মনোনয়ন দেয়ার জোর দাবি জানাই। তারা আরও বলেন, এই আসনে একই পরিবার থেকে ছোট ভাই জামায়াতের প্রার্থী এবং বড় ভাই বিএনপির প্রার্থী। সাধারণ ভোটাররা বিষয়টি ভালো চোখে দেখছে না। ভোটাররা অনেকটা বিভ্রান্ত। বয়সের ভারে ন্যুব্জ আজিজুর রহমান দীর্ঘ সাত বছর যাবৎ এলাকায় উপস্থিত ছিলেন না। দলীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটারগণের সংগে তার সম্পৃক্ততা নেই বলে বক্তাগণ উল্লেখ করেন।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনে ১৯৯১ এবং ২০১৮ সালে বিএনপির এমপি প্রার্থী আজিজুর রহমান নির্বাচনের পর থেকে এলাকায় আন্দোলন সংগ্রাম ও ভোটের রাজনীতিতে সম্পুর্ন অনুপস্থিত থাকেন। তার আপন ভাই এই আসনে মোস্তাফিজার রহমান জামায়াতের নিশ্চিত প্রার্থী এবং আর্থিক দিক থেকে আপেক্ষিকভাবে বিত্তবান। কাজেই একই পরিবারে দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী এমপি প্রার্থী হিসাবে জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে ঝুঁকে পড়ার সংশয়, সন্দেহ ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বিএনপির হাইকমান্ডকে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থীকে কোন ডামি প্রার্থীর ঝুঁকি গ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
আজিজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল করে সাবেক এমপি গোলাম হোসেনের কন্যা মমতাজ হোসেন লিপিকে বিএনপির মনোনয়ন দিলে এই আসনে ধানের শীষ নিশ্চিত জয়লাভ করবে বলে অনেকে মনে করছেন। এছাড়াও ভোটের সমীকরণে এলাকায় ব্যাপকভাবে মমতাজ হোসেন লিপির জয়লাভের কারণগুলো উচ্চারিত হচ্ছে এভাবেই-
রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী উপজেলা নিয়ে কুড়িগ্রাম-৪ আসন মুলত ব্রম্মপুত্র নদ দ্বারা দুভাগে বিভক্ত। এই আসনে ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ১২টি ইউনিয়ন মমতাজ হোসেন লিপির নিজ এলাকা অর্থাৎ ব্রম্মপুত্র নদের পশ্চিমে রৌমারী রাজিবপুরের সাথে। এখানে মমতাজ হোসেন লিপির পুর্ন অবস্থান সুসংহত।
মমতাজ হোসেন লিপি’র পিতা দু’বার রৌমারীতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, দুবার উপজেলা এবং দুবার নির্বাচিত এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার বাবার মৃত্যর পর তার আপন চাচা অত্র আসনের এমপি ছিলেন। রাজিবপুরে তার নানা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রণাঙ্গন খ্যাত রৌমারী তথা কুড়িগ্রাম-৪ আসনের জনগণ মমতাজ হোসেন লিপিকে এমপি নির্বাচিত করার জন্যে উন্মুখ হয়ে আছে বলে কৃষক দলনেতা রহিম জানান। তিনি বলেন,কুড়িগ্রাম-৪ আসনের এলাকাবাসীর যৌক্তিক বিষয় বিবেচনা পুর্বক বিএনপি থেকে মমতাজ হোসেন লিপির মনোনয়ন নিশ্চিতের অনুরোধ জানিয়েছেন।
মোহন/১৩.১১.২০২৫/ রাত ১০.৫২






