
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তৃদেশীয় সফরে বের হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মালয়েশিয়া দিয়ে তার এই সফর শুরু হয়। এরপর ইন্দোনেশিয়া সফরে যান তিনি। এরদোয়ান এখন পাকিস্তান সফরে রযেছেন।
এরদোয়ানের ইন্দোনেশিয়া সফরকালে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুই দেশের মধ্যে ডজন খানেক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে সামরিক ড্রোন চুক্তি অন্যতম। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবোয়ো সুবিয়ান্তোর উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তুরস্কের বায়কারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) হালুক বায়রাকতার এবং ইন্দোনেশিয়ার রিপাবলিকর্পের প্রতিষ্ঠাতা নরম্যান জোসেফ। এই চুক্তির আওতায় ৬০টি বায়রাক্তার টিবি৩ এবং ৯টি আকিনসি সামরিক ড্রোন ইন্দোনেশিয়ায় রফতানি করা হবে। বায়রাক্তার টিবি৩ হল বায়রাক্তার টিবি২ ড্রোনের উন্নত সংস্করণ, যা বিশ্বের রেকর্ড সংখ্যক দেশে বিক্রি হয়েছে।
তুরস্কের সঙ্গে এর আগেও সামরিক ড্রোন ক্রয়চুক্তি করেছে ইন্দোনেশিয়া। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার্কিশ অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে ওই চুক্তি স্বাক্ষর করে সাবেক প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো সরকার। ৩০ কোটি মার্কিন ডলারের ওই চুক্তির আওতায় তার্কিশ অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের ৩২ মাসের মধ্যে ইন্দোনেশিয়াকে ১২টি আঙ্কা সামরিক ড্রোন সরবরাহ করার কথা।
ডানার কাঠামো ভাঁজ হওয়ার কারণে বায়রাক্তার টিবি৩ স্বল্প-রানওয়ের জাহাজ থেকে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে সক্ষম। আর অতি উচ্চতা, সহনশীলতা এবং বিভিন্ন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র বহন সুবিধার কারণে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাপক প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে বায়রাক্তার আকিনসি ড্রোনের। যুদ্ধ ছাড়াও অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডের মতো জরুরি পরিস্থিতিতে মানবিক ত্রাণ সহায়তা সরবরাহে এর ভূমিকা প্রমাণিত। ড্রোনটির প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান বায়কারের দাবি, তাদের নির্মিত আকিনসি বিশ্বের একমাত্র ড্রোন যা ১৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
১৯৯১ সালের ২৫ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি ১৯৯২ সালে সামরিক শক্তি দিয়ে দখল করে নেয় আর্মেনিয়া, প্রতিষ্ঠা করে বিদ্রোহী স্বশাসিত সরকার। তুরস্কের সহায়তায় ২০২০ সালে নাগরনো-কারাবাখ আক্রমণ করে আজারবাইজান। সেখানে ব্যবহৃত হয় বায়রাক্তার টিবি২ ড্রোন। এই ড্রোনের মাধ্যমে রাশিয়ার অস্ত্রে সজ্জিত আর্মেনিয়ার সেনারা পর্যুদস্ত হয়।
প্রায় দেড় মাসের যুদ্ধে আজারবাইজানের কাছে আত্মসমর্পণ করে আর্মেনিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বায়রাক্তার টিবি২ ড্রোন ব্যবহার করে আসছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। বায়রাক্তার টিবি২ ড্রোনটি সম্প্রতি বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতেও যুক্ত হয়েছে।
কিউটিভি/আয়শা/১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৪:৪৪