হাইকোর্টের এক বেঞ্চে ‘কাগজমুক্ত’ বিচারকাজ শুরু নতুন বছরে

Anima Rakhi | আপডেট: ০১ জানুয়ারী ২০২৫ - ১২:৩৬:১৭ পিএম

ডেস্ক নিউজ : বিচারসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছাতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে নতুন বছরের শুরুতে ‘কাগজমুক্ত’ বিচারিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বেঞ্চ এবং জেলা আদালতগুলোতে শুরু করার আশা প্রকাশ করছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে তার এ প্রত্যাশার কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “২০২৫ সালের মধ্যে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচারসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর জন্য বিভিন্নমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের কোম্পানি সংক্রান্ত একটি বেঞ্চে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব তত্ত্বাবধায়ন ও উদ্ভাবনে ওই বেঞ্চের সকল কাগজাদি অনলাইনে জমা প্রদানের অনলাইন প্লাটফর্ম ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।”

প্রধান বিচারপতির প্রত্যাশা, তার ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবায়নে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে ২০২৫ সাল হবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য ‘নবযাত্রার’ একটি বছর। এ বছরে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণরূপে প্রভাবমুক্ত হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার সুফল ভোগ করবে।

ই-জুডিসিয়ারি বাস্তবায়নে প্রধান বিচারপতি ‘অত্যন্ত দৃঢ়কল্প’ বলে তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের উচ্চ আদালত ও জেলা আদালতগুলোর বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে ই-জুডিসিয়ারির আওতায় আনতে আগামীতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে এবং ২০২৫ সালের প্রথম দিকেই উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে মর্মে আশা করেন প্রধান বিচারপতি।

বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বাধীন কাউন্সিল গঠন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এছাড়া, ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ দরখাস্ত চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্গঠিত হয়েছে এবং সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল বর্তমানে পূর্ণ গতিতে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।”

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “যতদ্রুত সম্ভব বিচার বিভাগ থেকে সব ধরনের দুর্নীতি বিলোপের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীর জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক বিচারসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে ইতোমধ্যে প্রধান বিচারপতি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের সেবার মানোন্নয়নে প্রধান বিচারপতি ১২ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টে প্রতি মাসে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে মনিটরিং সভা নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হচ্ছে।”

রোডম্যাপের অগ্রগতির বর্ণনা করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের আদালতগুলোতে সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট একটি হেল্পলাইন ফোন নম্বর চালু করেছে। এতে ফোন করে সেবাগ্রহীতা প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা গ্রহণ করতে পারেন কিংবা যে কোনো অনিয়ম সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃকপক্ষকে অবহিত করতে পারেন। এসব অভিযোগ তদন্ত করে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।”

এতে করে সেবাগ্রহীতারা ইতোমধ্যে উন্নত বিচারসেবা প্রাপ্তির সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “গত ৭ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিতে ‘জুডিশিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি আঞ্চলিক সম্মেলন হয়, যেখানে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পৃক্ত বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী ও অন্যান্য অংশীজনদের কাছ থেকে বিচার বিভাগের মানোন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত সংগ্রহ করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সার্বিক মানোন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন; উক্ত মতামতসমূহ পর্যালোচনার মাধ্যমে শিগগরিই ২০২৫ সালের মধ্যে বিচার বিভাগে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত একটি বিশদ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।”

কিউটিভি/অনিমা/০১ জানুয়ারি ২০২৫,/দুপুর ১২:৩৬

▎সর্বশেষ

ad