ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপিকে নিয়ে পাহাড়সম অভিযোগঃ ১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : শিক্ষক,লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে উপকৃত হবেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক- ভিসি ড.আমানুল্লাহ ফেরদৌস বাজে ব্যাটিংয়ে ফাইনাল মিস বাংলাদেশের জনস হপকিন্সের সাথে কাজ করবে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  মজিদা কলেজে ৪০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, তোলপাড় কুড়িগ্রাম খারুয়ার পাড়ে ভাঙ্গনের শব্দ থেমে যাক — বদরুদ্দীন উমর : শিরদাঁড়া বাঁকা করে বাঁকা হয়নি যার কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহবায়ক ভারতীয় নাগরিক, এনআইডি বাতিলে হাইকোর্টের রুল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা : এইচআর হেডসহ আহত ১৫

পৌরসভার টাকায় খালের ওপর মেয়রের বহুতল মার্কেট

Ayesha Siddika | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৪ - ০১:২২:৪৫ পিএম

ডেস্ক নিউজ : গৌরীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই ত্রি-খালের মোহনায় বক্স কালভার্ট নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পানির স্রোতধারায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া, তিনি পৌরসভার অর্থব্যয়ে নিজস্ব বহুতল মার্কেটও নির্মাণ করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ১৮ আগস্ট এ অভিযোগ করেছেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মো. মাহফুজুর রহমান।

মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, গৌরীপুর পৌরসভার সতিষা, পূর্বদাপুনিয়া ও বালুয়াপাড়ার তিনটি খালের মিলন হয়েছে বালুয়া খালে। এ তিনটি খালে সতিষা, নওয়াগাঁও, গুজিখাঁ, গাঁওগৌরীপুর, চকপাড়া, নয়াপাড়া, পূর্বদাপুনিয়া, পশ্চিমদাপুনিয়া, শালিহরসহ প্রায় ১৬টি গ্রামের পানি নিষ্কাশন হয়। খালের আকৃতি পরিবর্তন করে এর উপরে পৌরসভার টাকায় মেয়র ব্যক্তিগত মার্কেট নির্মাণ করায় পানির স্বাভাবিক স্রোত বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে এ মৌসুমে অতিবৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশণ না হওয়ায় তলিয়ে গেছে আমন ধানের জমি ও বীজতলা।

গৌরীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, মাহফুজুর রহমানের ভাইয়েরা আমার কাছে জমি বিক্রি করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ইতোপূর্বে মামলা করেছেন। সেই মামলায় হেরে ব্যক্তিগত আক্রোশে তিনি আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছেন। আমি পৌরসভার উন্নয়নে শতভাগ নিয়মনীতি মেনে কার্যক্রম করেছি। কোথাও কোনো দুর্নীতি হয়নি। তিনি আরও বলেন, বালুয়াপাড়া মোড়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বক্সকালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। আমার সেখানে কোনো ব্যক্তিস্বার্থ নেই। আমি যে মার্কেট করেছি, এটা আমার নিজস্ব ভূমি। সেখানেও পৌরবাসী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে উপকৃত হচ্ছেন।

জানা যায়, এ খালের প্রথম দিকে রয়েছে ১৬ ফুট ৬ ইঞ্চি প্রশস্ত, মাঝে ২৬ ফুট ৫ ইঞ্চি, মোহনায় ৪৩ ফুট ও ৪৯ ফুট প্রশস্ত। খালের নির্ধারিত গতিপথ ও প্রশস্ত কমিয়ে ১০ ফুট প্রশস্তের বক্সকালভার্ট নির্মাণ করা হয়ছে। এ কারণে পানির স্বাভাবিক স্রোত কমে যাওয়ায় ফসলি জমি ও নিচু এলাকায় বসবাসকারী এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ পানি আইন ২০১৩’তে জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধা সৃষ্টি বা তার গতিপথ পরিবর্তন করে পানি সম্পদের ওপর কোনো স্থাপনা নির্মাণ বা ভরাট কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখলাক উল জামিল বলেন, নকশায় খালের অবস্থান ও পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতি দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবেক মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত মার্কেটের উন্নয়নের স্বার্থে গৌরীপুর পৌরসভা একাধিক প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বালুয়াপড়া মোড়ে খালের ওপর নির্মিত নতুন কালভার্ট থেকে পূর্বদিকে ৯ মিটার আরসিসি সিঙ্গেল ভেন্ট ৩ মিটার (১০ ফুট) বাই ৩ মিটার (১০ ফুট) বক্স কালভার্ট নির্মাণে ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৪ টাকা, একই সঙ্গে অপর আরেকটি প্রকল্পে ৯ মিটার আরসিসি আরেকটি বক্সকালভার্ট নির্মাণে ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৪ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কোভিড-১৯ প্রকল্পের অর্থায়নে ১২ মিটার আরসিসি সিঙ্গেল ভেন্ট ৩ মিটার বাই ৩ মিটার বক্সকালভার্ট নির্মাণে ১৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৬ টাকার আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। একই অর্থবছরে আইইউআইডিপি-০২ এর অর্থায়নে ৮৫ মিটার আরসিসি সিঙ্গেল ভেন্ট ৩ মিটার বাই ৩ মিটার বক্সকালভার্ট নির্মাণে এক কোটি এক লাখ টাকার আরেকটি প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

গৌরীপুর পৌরসভার উপ-প্রকৌশলী মদন মোহন দাস বলেন, খালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে সাবেক মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মার্কেট নির্মাণ করেছেন। পৌরসভার অর্থায়নে শুধু খালের ওপর বক্সকালভার্ট নির্মাণ করেছি। গৌরীপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব সচিব) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, খালটি পৌরসভার পানিপ্রবাহের নিজস্ব সম্পদ। অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা বলেন, এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/৩০ অগাস্ট ২০২৪,/দুপুর ১:২১

▎সর্বশেষ

ad