
জালাল আহমদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি যৌন-হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদে আজ ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড.দিপ্তী শিকদার।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম, আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি , ঢাকা মহানগর কমিটির লিগ্যাল এইড সম্পাদক শামীমা আফরোজ আইরিন, এবং অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক গোস্বামী।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, “বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বারংবার সংঘটিত যৌন নিপীড়নের ঘটনা বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনকে চরম একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আজ বিঘ্নিত। ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘটিত যৌন সহিংসতার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোন আন্দোলন হতে দেখিনি”।
তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নের ঘটনা প্রতিরোধে এসময় সমগ্র সমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন,” শিক্ষাঙ্গন থেকে সমস্ত দূর্নীতি বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুসারে গঠিত যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে এবং নারীর প্রতি অবমাননাকে সামাজিক অবমাননা হিসেবে দেখতে হবে”।
উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীদের উপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা সমগ্র বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের বিষয়। ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যৌন নিপীড়নের শিকার ৯০% ছাত্রী তার শিক্ষাজীবন নিয়ে হুমকিতে পড়া সহ বিভিন্ন কারণে অভিযোগ করেন না। তারা এসময় মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক প্রণীত আদেশ অনুসারে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি রয়েছে এবং কমিটিগুলো কতটুকু কার্যকর সেটি মনিটর করার জোর দাবি জানান।
পাশাপাশি তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বন্ধে রাজনৈতিক ছত্রছায়ার প্রভাব দূর করে অপরাধকারী শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও চাকরিচ্যুত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা, রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, অতি দ্রুত মহামান্য হাইকোর্টের রায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করা সহ এই রায়ের আলোকে একটি আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে নারী-পুরুষ সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মানববন্ধন কর্মসূচীতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমন্ডলী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কিউটিভি/আয়শা/২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪/রাত ৮:০৮