এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় এক কলেজছাত্রী (১৭) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণে বাঁধা দেওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে ব্যাপক মারপিট করে আহত করেছে ধর্ষকরা। এ ঘটনায় এক ধর্ষক সুশান্ত দাসকে (২০) গ্রেফতারের পর ঝিনাইদহের মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে পাঠিয়েছেন চৌগাছা থানাপুলিশ। ধর্ষণের আলামতও জব্দ করা হয়েছে। আটক ধর্ষক সুশান্ত দাস চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া গ্রামের সুকদেব দাসের ( গ্রাম পুলিশ) ছেলে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে চৌগাছার পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের মহেশখালী গ্রামে কাটগড়া বাওড়ের ব্রীজ এলাকায় এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেন ও তার স্বজনরা দুপুর দুইটার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একজন চিকিৎসকের কাছে নেন। সেখান থেকে বিকেল ৪.২০ মিঃ চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ঐ ছাত্রী বর্তমানে যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে এটা নিশ্চিত। তবে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ হয়েছে কিনা সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে। মেয়েটি খুবই আতংকে রয়েছে।
চৌগাছা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চৌগাছা হাসপাতালে মেয়েটিকে নিয়ে আসার পর মেয়েটির জ্ঞান ফেরে। এসময় সে ব্যাপক ছটফট করছিলো। পরে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক লুৎফুন্নেছা লতা একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন নার্স ও মেয়েটির চাচিকে সাথে রেখে প্রাথমি পরীক্ষা করেন। সেখানে মেয়েটি চিকিৎসকদের জানায় তাকে চারজন মিলে ধর্ষণ করেছে।
সুখপুকুরিয়া ইউপির পুড়াপাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসি। উদ্ধার করার সময় মেয়েটি অজ্ঞান ছিলো। স্থানীয় কিছু যুবক মেয়েটি এবং সুশান্তকে আটক করে রেখেছিলো। ওই এলাকাটা আমাদের সীমানার বাইরে। ছেলে-মেয়ে আমাদের ইউনিয়নের হওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি সেখানে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করি।
চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আল ইমরান বলেন, মেয়েটির কাছে শুনতে চাইলে সে সংঘবদ্ধ ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে বলে মাথা নেড়ে সম্মতি দেয়। তবে সে চিৎকার ও ছটফট করা ছাড়া চিকিৎসকদের কোনো কথারই উত্তর দেয়নি। এদিকে ধর্ষণের আগে বা পরে ওই শিক্ষার্থীকে স্থানীয় কিছু যুবক ব্যাপক মারপিট করে। মারপিটে সে মারাত্মক আহত হয়েছে। হাসপাতালে প্রাথমিক পরীক্ষা করে জানা গেছে, মেয়েটির বুকে, তলপেটেসহ বিভিন্ন জায়গায় দুর্বৃত্তরা লাথি, কিল-ঘুসি মেরে আহত করেছে।
হাসপাতালে উপস্থিত থাকা চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) জেল্লাল হোসেন বলেন, মেয়েটিকে মারপিটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, মেয়েটির হাতে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখমের চিহ্ন রয়েছে।
এ ব্যাপারে চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক লুৎফুন্নেছা লতা বলেন, ভিকটিম শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও রয়েছে।
এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ঘটনার পিওতে আমি গিয়েছিলাম, স্থানটি মহেশপুর উপজেলার মধ্যে। তাই আটক যুবককে মহেশপুর থানায় পাঠানো হয়েছে। মামলা সেখানেই হবে।
এ ব্যাপারে মহেশপুর থানার ওসি খন্দকার শামীম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এক যুবককে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কিউটিভি/আয়শা/৩১ অক্টোবর ২০২৩,/রাত ৯:৩৫