ডেস্ক নিউজ : ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। গতকাল ১ মে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্ত জানাতে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষে এই নিবর্তনমূলক আইনকে সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। সভায় বিলটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল ২০২৩ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে সংসদে পেশ করা হয়েছে। শিগগিরই তা আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইন নানা কারণে বিতর্কিত, অগণতান্ত্রিক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের স্বার্থবিরোধী, একতরফা, নিবর্তনমূলক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বরখেলাপ।
আইনটি প্রণয়নের কোনো পর্যায়েই অংশীজনের মতামত নেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনের পরিধি শুধু বিস্তৃত নয়, অসীম। সরকার ইচ্ছা করলেই যেকোনো শিল্প, প্রতিষ্ঠান, পেশা ও সেবাকে এই আইনের আওতায় এনে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করে তা অমান্য করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানাতে পারবে। এই আইনকে প্রচলিত শ্রম আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে যুগ যুগ ধরে আন্দোলন করে শ্রমজীবী জনগণ যা কিছু অধিকার অর্জন করেছিল তা নাকচ করে দেওয়া হবে।
প্রচলিত শ্রম আইনেই কোনো ধর্মঘট জনজীবন বা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করলে তা নিষিদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট বিরোধটি শ্রম আদালতে পাঠানোর কথা বলা আছে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সরকার প্রয়োজন মনে করলেই লাখ কোটি শ্রমজীবী, পেশাজীবী মানুষকে ধর্মঘট নিষিদ্ধ ঘোষণার আওতায় রাখতে পারবে। কিন্তু তাদের ন্যায্য সমস্যা সমাধান বা প্রাপ্য আদায়ের কোনো বিকল্পের কথা আইনে রাখা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত আইনটি শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকারকেই ক্ষুণ্ণ করবে না, এটি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং জনগণের সংবিধান সম্মত প্রতিবাদের অধিকার পরিপন্থী। বিএনপি প্রস্তাবিত ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩’ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ।
কিউটিভি/আয়শা/০২ মে ২০২৩,/রাত ৮:১৫