দুর্গাপুরে বন্যহাতির তান্ডব, তছনছ ২৫টি ঘরবাড়ি

Anima Rakhi | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২২ - ০২:০৪:৪৭ পিএম

তোবারক হোসেন খোকন,দুর্গাপুর(নেত্রকোণা)প্রতিনিধি : নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের আড়াপাড়া, পশ্চিমবিজয়পুর ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ভবানীপুর, গোপালপুর গ্রামে বন্য হাতির দল তান্ডব চালিয়ে ফসল ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই ভারত থেকে নেমে আসা হাতির দল এ তান্ডব চালায়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গত তিন চার দিনে হাতির দল ২০ থেকে ২৫ টি ঘর-বাড়ির গুড়িয়ে দিয়ে ওই এলাকার বহু জমির ফসল, বাড়িতে রাখা ধান থেয়ে সাবার করে দিয়েছে। হাতির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে কেউ খোলা আকাশের নীচে, আবার কেউ কেউ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। ইতোমধ্যে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন পশ্চিম বিজয়পুর গ্রামের এক আদিবাসী কৃষক। আগেও হাতির তান্ডবে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে ওই এলাকার মানুষ না পারছে তাদের ফসল রক্ষা করতে না পারছে তাদের ঘর-বাড়ি রক্ষা করতে। জীবনের ঝুঁকি রাতে নিয়ে মশাল জালিয়ে ফসল ও বাড়ি ঘর রক্ষার চেষ্টা করলেও বন্য হাতির সামনে দাঁড়াতে পারছে না তারা। পেটে ক্ষুধা ও আশ্রয়স্থল হারিয়ে অনেক পরিবারই হতাশ হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে বন্য হাতির তান্ডবে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে চার পাচ গ্রামের মানুষ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মাঝে নগদ অর্থসহ কম্বল বিতরণ করে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।ক্ষতিগ্রস্থ্য মনোয়ারা বেগম জানান, রাতে হঠাৎ বন্যহাতির একটি দল আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। হাতিগুলো আমার বসত ঘরের খুঁটি, বেড়া, ভেঙে তছনছ করে ফেলে। বসত ঘরে থাকা হাঁড়ি-পাতিল, জামা-কাপড়সহ যাবতীয় আসবাবপত্র পিষে নষ্ট করে। তখন ঘরবাড়ি ফেলে সন্তানাদি ও জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যাই আমরা। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তান্ডব চালিয়েছে হাতির দল। শুধু তাই নয় ঘরে রাখা চাল ও ধান নষ্ট করেছে ক্ষুধার্থ হাতির দলটি।দুর্গাপুর সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. সাদেকুল ইসলাম জানান, হাতিগুলো বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে এবং রাত হলেই চলে আসছে লোকালয়ে এতে স্থানীয়রা রয়েছে আতঙ্কে। বন্যহাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে ধান, সবজি, গাছ-পালাসহ মানুষের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ করছে প্রতিনিয়ত। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছি।

বন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরই বন্যহাতি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করে এ ধরনের ক্ষতি করে। তবে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের বন বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়। এবারও বন বিভাগের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্থ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা হবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, ভারতীয় বন্য হাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে আড়াপাড়া ও পশ্চিমবিজয়পুর, ভবানীপুর, গোপালপুর সহ কয়েকটি গ্রামের ফসল, বাড়ি-ঘর ভাংচুর সহ ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তাৎক্ষণিক ভাবে তাদের ভেঙে যাওয়া ঘর মেরামতের জন্য ২ হাজার টাকা ও শীতবস্ত্র কম্বল প্রদান করেছি। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের আরোও সহায়তা দেয়া হবে।

 

কিউটিভি/অনিমা/১১.১২.২০২২/দুপুর ২.০৪

▎সর্বশেষ

ad