ব্রেকিং নিউজ
আই হ্যাভ আ প্ল্যান : তারেক রহমান সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার : তারেক রহমান আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের খবর কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনে বিতর্কিতদের প্রশ্রয় : শংকিত জেলাবাসী গণতন্ত্রের জন্য চলা সংগ্রাম-লড়াই চালিয়ে যাব : মির্জা ফখরুল ঢাকায় এমপি প্রার্থী ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মমতাজ হোসেন লিপিকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে রৌমারীতে মশাল মিছিল আর্থিক অনিয়মে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামঃ অভিযোগের ঝড় খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজে কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু কুড়িগ্রামে পরপর ৬ ডিসির মধ্যে ৪ জনই নারী ডিসি

সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলাদেশ নামকরণের কথা

superadmin | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২ - ১২:৪৮:০৬ পিএম

ফায়াজুন্নেসা চৌধুরী, বিশেষ প্রতিবেদকঃ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ও রাজনৈতিক সংকট নিরসনে যে নেতার জীবন ও আদর্শ আমাদের কতটা প্রেরণা যোগায়, কিংবা বাংলার রাজনীতিতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অবদান কতটুকু, বলার অপেক্ষাই রাখে না।

আমরা যখন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবনী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি, তখন তার মৃত্যু সর্ম্পকে সবসময় একটি লাইনই কেবল পাই। আর তা হলো, ‘তার মৃত্যু অনেকের কাছেই রহস্যমণ্ডিত’। কিন্তু এই রহস্য কি, তা আমরা জানি না। জানার সুযোগও কখনো পাইনি, জানার চেষ্টাও হয়তো কখনো করি নাই।

বাংলার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বিকাশ ও এ দেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যে মানুষটি কাজ করে গেছেন সারা জীবন; নতুন প্রজন্মকে গণতান্ত্রিক চিন্তা চেতনা ও জনগণের সার্বিক কল্যাণে উদ্বুদ্ধ করবে যার জীবন ও কর্ম; সেই মহান মানুষটির মৃত্যুরহস্য পরিষ্কার হয়নি ৫৫ বছরেও।

অথচ বিশ শতকের গোড়ার দিক থেকে যে ক’জন রাজনীতিক আধুনিক বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করার জন্য রাজনীতির ক্ষেত্রে আমৃত্যু সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাঁদের মধ্যে অন্যতম। রাজনীতির জগতে সাফল্য লাভ করতে হলে যে কৌশলের আশ্রয় নিতে হয় এবং রাজনীতির জন্য প্রয়োজন হয় যে তীক্ষ মেধার, তার পরিচয় পাওয়া যায় সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক জীবন থেকে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান বাঙালি জাতির সামনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অবিরাম অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন তিনি।

এমনকি বাংলাদেশের নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সোহরাওয়ার্দীর নাম। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের নামকরণ করেছিলেন তিনি।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো নেতাদেরকে বর্তমান প্রজন্ম (আমরা) দেখেনি। কিন্তু ইতিহাস থেকেও তাকে চিনতে পারেনি। বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ ছেলে মেয়েই মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহন করে, লালন করে। কিন্তু তারা তো যুদ্ধ দেখেনি!

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো একজন মানুষ এখনো আমাদের ইতিহাসে উপেক্ষিত থেকে গেছেন। তাঁকে নিয়ে ইতিহাসও বিকৃত হয়েছে।’ তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েও বাংলার জন্য কিছু করেননি’।

অথচ বৃটিশ ভারতের সবচেয়ে মানবতাবাদী, গণতান্ত্রিক নেতা ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনিই প্রথম মুসলীম লীগের অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। শেখ মুজিবকে বাংলার নেতা হিসাবে তিনিই প্রস্তুত করেছিলেন। শেখ মুজিবকে সাথে নিয়ে ১৯৪৬-৪৭ এর অশান্ত দিনগুলোতে নিজের ভবিষ্যৎ বিসর্জন দিয়ে তিনি দাঙ্গা প্রতিরোধ করেছেন। এবং ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিতে ২৮ বছরের তরুণ শেখ মুজিবকে ঢাকায় পাঠান।

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর প্রভাব যে কতটা স্পষ্ট, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি পড়লেই ঝকঝকে হয়ে উঠবে।

বইটিতে সবচেয়ে বেশি বার যার কথা এসেছে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। প্রায় পুরো বইয়েই বঙ্গবন্ধু তাঁকে ‘শহীদ সাহেব’ বলে সম্বোধন করেছেন। সোহরাওয়ার্দী ছিলেন একাধারে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে আসার প্রেরণা, রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এবং পরম শ্রদ্ধার পাত্র।
উপমহাদেশের যে সমস্ত রাজনীতিবিদের নাম রাজনীতিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে স্বদেশের গতি পেরিয়ে বিদেশেও বহুল আলোচিত হয়, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাদের অন্যতম।

কিছু জীবন দৌড়াতে দৌড়াতে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর দিকেই রূপান্তরিত হয়। আবার কিছু মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে যায়, কিছু মৃত্যু পুরো সভ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যায়। কিছু জীবন আজীবন অন্যের তরে উৎসর্গিত হয়, আজ এই মহান চেতনা নির্মাতার ৫৬তম শাহাদাতবার্ষিকী। বিনম্র শ্রদ্ধা।

বিপুল/০৫.১২.২০২২/ দুপুর ১২.৩৭

▎সর্বশেষ

ad