
‘তিনি আপনার স্বামী, তাকে অনর্থক সন্দেহ করবেন না’
——————————————————————-
জাহাঙ্গীরনগরে প্রথম বর্ষে পড়ার সময়, মিরপুরে অবস্থান করতাম। সেদিন বাস থেকে টেকনিক্যাল মোড়ে নেমে উল্টাপাশে আসতেই একজন সার্জেন্টের বাইক দেখলাম। আমার ঝোলা থেকে ছোট্ট একটা সোনালী রঙের চিরুনি বের করে সার্জেন্টের বাইকে আমার চেহারাটি দেখে মাথার চুল আঁচড়াতে লাগলাম। হঠাৎ কোথা থেকে সার্জেন্ট ভাই এসে আমাকে বলল ,’আপা এটা কি করেন?’
-শখ হয়েছে,, কি আর করা? তা আপনার ওই পিস্তলে গুলি আছে তো?
পুলিশ ভাই একটু জোরে হেসে ফেলল।-আপনি মনে হয় জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রী, বাস থেকে নামতে দেখলাম।
মনে মনে ভাবলাম পুলিশ ভাইদের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অনেক ভালো।
এর বেশ কয়েকদিন পর। বাস থেকে নামতেই মাথায় একটি কাক পায়খানা করে দিল। আমি মাথার চুলে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে, ভাবলাম সার্জেন্টের বাইকের আয়নায় একটু চুলের অবস্থাটি দেখে, বাসার দিকে যাই। উল্টা পাশে এসে একটি বাইকের আয়নায় কেবল চিরুনিটি ব্যাগ থেকে বের করে চুল আঁচড়াতে শুরু করলাম। হঠাৎ দেখি একজন স্থূলকায় রমণী ও ক্ষীণ স্বাস্থ্যের এক পুরুষ সেখানে উপস্থিত।
আমাকে দেখে মহিলাটি বলল – আপনি কে?
আমি পুরুষটির দিকে চোখ তুলে বললাম’ আপনি পুলিশ না?’
হঠাৎ করে কি হলো বুঝলাম না মহিলাটি স্বামীর মাথার চুল আঁকড়ে ধরে বলল ‘ও সারাদিন এই মেয়ে কে নিয়ে ঘুরিস, তাকে জানাস নাই তুই বেকার, তার সামনে তুই পুলিশ সেজে আছিস’ এবং সেই সাথে মহিলাটি স্বামীকে কিল ঘুষি মারতে লাগলো। তখন কোথা থেকে সেই পুলিশ সার্জেন্ট দৌড়ে এসে বলল ‘আপনারা মারামারি করছেন কেন?
মহিলাটি যখন সমস্ত ঘটনাটি বলল। তখন পুলিশ বলল ‘তিনি আপনার স্বামী, তাকে অনর্থক সন্দেহ করবেন না।
লেখিকাঃ জয়শ্রী দাস জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্রী। মাঝে মাঝে সাহিত্য চর্চা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর লেখা বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করে। ঢাকা নগরীর বাসিন্দা জয়শ্রী দাস জীবনের খন্ড চিত্র আঁকতে পারদর্শিনী। এই পোস্টটি তাঁর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে সংগৃহিত।
বিপুল/১৭.০৮.২০২২/ দুপুর ১২.১৫