গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে ১১ বন্দিকে ওমানে স্থানান্তর

Ayesha Siddika | আপডেট: ০৮ জানুয়ারী ২০২৫ - ০৯:২৯:০০ পিএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা দফতর এক ঘোষণায় জানায়, ওমানের সহায়তায় ১১ ইয়েমেনি বন্দিকে গুয়ানতানামো কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবে তাদেরকে তাদের নিজ দেশে পাঠানো হয়নি। তার বদলে ওমানে নেয়া হয়েছে। সেখানে তাদেরকে পুনর্বাসন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদার হামলার পর তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সময় আফগানদের আটক রাখতে তৈরি করা হয় গুয়ানতানামো বে কারাগার। এরপর এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের বহু মানুষকে সেখানে বিনা বিচারে আটকে রাখা হয়।
 
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের তথ্য মতে, ২০০৩ সাল পর্যন্ত গুয়ানতানামো বে-র বন্দি সংখ্যা ৬৮০ জনে দাঁড়ায়। তবে কোনো কোনো প্রতিবেদনে এই সংখ্যা ৮০০ জন বলা হয়েছে। শুরু থেকেই এই কারাগারে বন্দিদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বিনাবিচারে দীর্ঘদিন আটকে রাখা এবং আইনজীবী বা ন্যায়বিচারের সুযোগ না দেয়ার মতো ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে।
 
দীর্ঘদিন ধরে তাদের মুক্তি দিয়ে গুয়ানতানামো বে কারাগারটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন কিছু মানবাধিকার সংগঠন ও কয়েকজন আইনপ্রণেতা। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর কঠোর সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্দিদের মুক্তি দেয়া শুরু হয়। 
 
পেন্টাগনের দেয়া তথ্য মতে, সরিয়ে নেয়া ১১ বন্দির নাম যথাক্রমে উসমান আবদ আল-রহিম মুহাম্মদ উসমান, মোয়াজ হামজা আহমেদ আল-আলভি, খালিদ আহমেদ কাসিম, সুহেল আবদুল আনাম আল শারাবি, হানি সালেহ রশিদ আবদুল্লাহ, তৌফিক নাসির আওয়াদ আল বিহানি, ওমর মোহাম্মদ আলী আল-রামাহ, সনদ আলী ইসলাম আল কাজিমি, হাসান মুহাম্মদ আলী বিন আত্তাশ, শারকাবি আবদু আলী আল হাজ্জ এবং আবদ আল-সালাম আল-হিলাহ।
 
মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস জানায়, শারকাবি আল হাজ ২১ বছর বিনা বিচারে বন্দি ছিলেন। একাধিকবার অনশন করেছেন তিনি। যে কারণে হাসপাতালেও যেতে হয় তাকে। সিআইএর হেফাজতে তার ওপর টানা দুই বছর অত্যাচার চালানো হয়।
 
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই স্থানান্তরকে স্বাগত জানালেও গুয়ানতানামো কারাগারকে ‘মানবাধিকারের দীর্ঘস্থায়ী কলঙ্ক’ হিসেবে অভিহিত করেছে। সংস্থাটি বলেছে, কারাগারে বন্দিদের প্রতি হওয়া নির্যাতন এবং তাদের দীর্ঘদিন অভিযোগহীন বন্দিত্ব আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
 
দক্ষিণ-পূর্ব কিউবার একটি মার্কিন নৌ ঘাঁটিতে নির্মিত কারাগারটি কারাগারটিতে এখন আর মাত্র ১৫ জন বন্দি আছেন। এর মধ্যে ৬ জনই বিনা অপরাধে বন্দি রয়েছেন। ২ জন দোষী সাব্যস্ত এবং ৭ জনের বিরুদ্ধে নাইন ইলেভেনসহ একাধিক বোমা হামলার অভিযোগ রয়েছে। তবে বন্দি স্থানান্তর প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি ওমান সরকার। অতীতে ২৮ জন বন্দিকে ওমানে পাঠানো হয়েছে, তাদের সম্পর্কেও তেমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
 
ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা কেজ ইন্টারন্যাশনাল জানায়, তাদের মধ্যে একজন ইয়েমেনি ওমানে মারা যান। বাকিদের মধ্যে ২৬ জন ৭০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ নিয়ে ইয়েমেনে ফিরে যান। আর ২৮তম বন্দির কী হয়েছিল, তা জানা যায়নি।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স ও আল জাজিরা

 

 

কিউটিভি/আয়শা/০৮ জানুয়ারী ২০২৫,/রাত ৯:২২

▎সর্বশেষ

ad