ব্রেকিং নিউজ
আই হ্যাভ আ প্ল্যান : তারেক রহমান সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার : তারেক রহমান আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের খবর কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনে বিতর্কিতদের প্রশ্রয় : শংকিত জেলাবাসী গণতন্ত্রের জন্য চলা সংগ্রাম-লড়াই চালিয়ে যাব : মির্জা ফখরুল ঢাকায় এমপি প্রার্থী ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মমতাজ হোসেন লিপিকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে রৌমারীতে মশাল মিছিল আর্থিক অনিয়মে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামঃ অভিযোগের ঝড় খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজে কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু কুড়িগ্রামে পরপর ৬ ডিসির মধ্যে ৪ জনই নারী ডিসি

মহানবী (স.)-এর অনন্য বৈশিষ্ট্য

Ayesha Siddika | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ - ০১:৩৫:০৭ পিএম

ডেস্ক নিউজ : আল্লাহ তাআলা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দৈহিক গঠনে যেমন করেছেন অনেক সুন্দর তেমনই আচরণ-উচ্চারণও করেছেন পৃথিবীর সবার থেকে সেরা। তার আদর্শ সবার জন্যই অনুসরণীয়। তার অনন্য বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলো।

মহানবীর পাঁচ অনন্য বৈশিষ্ট্য

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় প্রদান করা হয়েছে, যা আমার আগে কোনো নবীকে দেয়া হয়নি। ১. আমাকে এমন প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে, যা এক মাসের দূরত্ব পর্যন্ত অনুভূত হয়। ২. সব জমিন আমার জন্য নামাজ আদায়ের স্থান ও পবিত্রতা অর্জনের উপায় করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কেউ যেখানে নামাজের ওয়াক্ত হয় (সেখানেই) যেন নামাজ আদায় করে নেয়। ৩. আমার জন্য গনিমত হালাল করা হয়েছে। ৪. অন্যান্য নবী নিজেদের বিশেষ গোত্রের প্রতি প্রেরিত হতেন আর আমাকে সব মানবের প্রতি পাঠানো হয়েছে। ৫. আমাকে (ব্যাপক) শাফাআতের অধিকার প্রদান করা হয়েছে। (বুখারি ৪২৫)

 

বাইতুল মুকাদ্দাসে সব নবীর নামাজে ইমামতি

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তারপর (মিরাজের সময় বাইতুল মুকাদ্দাসে) নামাজের সময় হলো, আমি তাদের (নবীদের) ইমামতি করলাম। (মুসলিম ৩২৭)

নবীজির জন্য অন্য সব নবীর কাছ থেকে ওয়াদা গ্রহণ

আল্লাহ তাআলা সব নবী থেকে ওয়াদা নিয়েছেন যে বিশ্বনবী (স.) যদি আগমন করেন তাহলে তারা তাঁকে সত্যায়ন করবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং (তাদেরকে সেই সময়ের কথা স্মরণ করাও) যখন আল্লাহ নবীদের থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন, আমি যদি তোমাদের কিতাব ও হিকমত দান করি, তারপর তোমাদের কাছে কোনো রসুল আগমন করে, যে তোমাদের কাছে যে কিতাব আছে তার সমর্থন করে, তবে তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং অবশ্যই তার সাহায্য করবে।

আল্লাহ তাআলা (সেই নবীদের) বলেছিলেন, তোমরা কি এ কথা স্বীকার করছ এবং আমার পক্ষ থেকে প্রদত্ত এই দায়িত্ব গ্রহণ করছ? তারা বলেছিল, আমরা স্বীকার করছি। আল্লাহ বলেন, তবে তোমরা (একে অন্যের স্বীকারোক্তি সম্পর্কে) সাক্ষী থাকো এবং আমিও তোমাদের সঙ্গে সাক্ষী থাকলাম।’ (সুরা আলে ইমরান ৮১)

আগে-পরের সব গুনাহ মাফ

স্পষ্ট ঘোষণার মাধ্যমে প্রিয় নবীজির আগে-পরের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, (হে রসুল) নিশ্চয়ই আমি তোমাকে প্রকাশ্য বিজয় দান করেছি, যাতে আল্লাহ তোমার অতীত ও ভবিষ্যতের সব ত্রুটি ক্ষমা করেন, তোমার প্রতি তার নেয়ামত পূর্ণ করেন এবং তোমাকে সরল পথে পরিচালিত করেন। (সুরা আল-ফাতহ ১-২)

 

অন্য কোনো নবীর ব্যাপারে এভাবে স্পষ্ট কোনো বর্ণনা নেই যে তাদের আগের এবং পরের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে। তবে নবীরা মাসুম এ কথা সত্য ও শিরোধার্য।

পুরো জগতের নবী

আমাদের নবীজি (সা.)-কে পুরো বিশ্বের জন্য নবী বানিয়ে প্রেরণ করেছেন এবং তিনি ছিলেন জিন, মানুষসহ সবার নবী। আর অন্য নবীদের পাঠিয়েছেন এলাকাভিত্তিক। আল্লাহ তাআলা বলেন,

এবং (হে নবী) আমি তোমাকে সব মানুষের জন্য একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে পাঠিয়েছি, কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ বুঝছে না। (সুরা সাবা ২৮)

রসুলের জীবন নিয়ে আল্লাহর শপথ

আল্লাহ তাআলা কোরআনে শরিফে রসুলের হায়াত নিয়ে শপথ করেছেন। এটি আমাদের নবীর সঙ্গে সীমাবদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে নবী) তোমার জীবনের শপথ! প্রকৃতপক্ষে ওই সব লোক নিজেদের মত্ততায় বুঁদ হয়ে গিয়েছিল।’ (সুরা হিজর ৭২)

কোরআনে রসুল বলে সম্বোধন

কোরআনে আল্লাহ তাআলা নবীজিকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বলে সম্বোধন করেছেন, অথচ অন্য নবীদের ক্ষেত্রে সরাসরি নাম বলে সম্বোধন করেছেন; এটি প্রিয় নবী (সা.)-এর সম্মান ও মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রসুল, তোমার প্রতি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা কিছু নাজিল করা হয়েছে, তা প্রচার করো। যদি (তা) না করো, তবে (তার অর্থ হবে) তুমি আল্লাহর বার্তা পৌঁছালে না। আল্লাহ তোমাকে মানুষের (ষড়যন্ত্র) থেকে রক্ষা করবেন। আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।’ (সুরা মায়েদা ৬৭)

আর যেখানে নবীজি (স.)-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে রসুলকে সম্বোধন করে কোনো কিছু বলা হয়নি বা আদেশ করা হয়নি। বরং রসুলের নাম হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ অন্য নবীদের নাম উল্লেখ করে আদেশ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘(আমি তাকে বললাম), হে ইবরাহিম, এ বিষয়টা যেতে দাও। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালকের হুকুম এসে পড়েছে এবং তাদের ওপর এমন শাস্তি আসবেই, যা কেউ প্রতিহত করতে পারবে না।’ (সুরা হুদ ৭৬)

সংক্ষিপ্ত ও বিশদ অর্থবহ বাণীর বাহক

নবীজি (স.)-এর অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রসুলকে অল্প কথায় অধিক অর্থসম্পন্ন কথা বোঝানোর বিশেষ যোগ্যতা দান করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাকে ছয়টি জিনিস দ্বারা অন্য নবীদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। আমাকে ব্যাপক তথ্যপূর্ণ ও অর্থবহ বাণী দান করা হয়েছে। (মুসলিম ১০৫০)

নবীজিকে ধনভাণ্ডারের চাবি দেয়া হয়েছিল

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, একবার আমি নিদ্রায় ছিলাম, এমতাবস্থায় পৃথিবীর ধনভাণ্ডারগুলোর চাবি আমার হাতে অর্পণ করা হয়। (বুখারি ২৭৬৯)

সুরা ফাতিহা ও সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, জিবরাইল (আ.) নবীজি (স.)-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলেন, ইত্যবসরে ওপরের দিকে তিনি একটি আওয়াজ শুনতে পেয়ে নিজের মাথা তুললেন এবং বললেন, এটি আসমানের একটি দরজা, যা আজই খুলে দেয়া হলো; আজকের দিন ব্যতীত কখনো তা খোলা হয়নি। তখন সে দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতরণ করলেন।

তিনি বলেন, ইনি একজন ফেরেশতা, যিনি পৃথিবীতে অবতরণ করলেন, আজ ছাড়া অন্য কখনো তিনি অবতরণ করেননি। এরপর উক্ত ফেরেশতা সালাম করে বললেন, দুটি নুরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা আপনাকে দেয়া হয়েছে এবং যা আপনার আগে আর কোনো নবীকে দেয়া হয়নি। তা হলো সুরা ফাতিহা ও সুরা বাকারার শেষাংশ। এ দুটির যেকোনো হরফ আপনি পাঠ করবেন, তা আপনাকে দিয়েই দেয়া হবে (এতে যে দোয়ার বিষয়বস্তু আছে তা কবুল করা হবে)। (মুসলিম ১৭৫০)

রসুলের কাছে উম্মতের দরুদ উপস্থাপন

হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) সূত্রে নবী (স.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের সব দিনের মধ্যে পরম উৎকৃষ্ট দিন হলো জুমার দিন, সেদিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, সেদিনই তার ওফাত হয়, সেদিনই দ্বিতীয়বার শিঙায় ফুঁ দেয়া হবে এবং সেদিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।

অতএব, তোমরা আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পড়ো। কেননা, তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। তারা বলেন, হে আল্লাহর রসুল, কীভাবে আমাদের দরুদ আপনার কাছে পেশ করা হবে। যেহেতু আপনি (একসময়) ওফাত পেয়ে যাবেন- অর্থাৎ তারা বললেন, আপনার দেহ মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা জমিনের জন্য নবীদের দেহ গ্রাস করা হারাম করে দিয়েছেন। (নাসায়ি ১৩৭৪)

রসুলের রওজা জান্নাতের টুকরা

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে নবী করিম (স.) বলেছেন, আমার ঘর ও আমার মিম্বারের মধ্যবর্তী স্থানটি হলো জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগান। (তিরমিজি ৩৯১৬)

তিনি সবশেষ নবী ও রসুল

ইরশাদ হয়েছে, ‘(হে মুমিনরা) মুহাম্মদ (স.) তোমাদের কোনো পুরুষের পিতা নয়, কিন্তু সে আল্লাহর রসুল এবং নবীদের মধ্যে সবশেষ। আল্লাহ সব বিষয়ে পরিপূর্ণ অবগত।’ (সুরা আহজাব ৪০)

 

 

কিউটিভি/আয়শা/১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/দুপুর ১:৩০

▎সর্বশেষ

ad