
ডেস্কনিউজঃ দুই দিনের ভারী বর্ষণে কিশোরগঞ্জের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষের যাতায়াতে ঘটছে বিঘ্ন আর সীমাহীন ভোগান্তি।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বৃষ্টির পানিতে রেললাইন ডুবে যাওয়ায় জেলায় ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
ভারী বর্ষণে জেলা শহরের নগুয়া, পুরান কোর্ট, বত্রিশ, হয়বতনগর, শোলাকিয়া, কানিকাটা, উকিলপাড়া, খরমপট্টি, আখড়াবাজার, গাইটালসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
পানিতে ঘরের আসবাব তলিয়ে বিছানাপত্র ভিজে যাওয়ায় ওইসব এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাদের বৃহস্পতিবার সারারাত জেগে কাটাতে হয়েছে।
পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় ওইসব এলাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার রাতেও ওইসব এলাকায় ঘর থেকে পানি নামেনি। জলাবদ্ধতা দূর করতে অনেকেই মোটর ব্যবহার করেছেন। এরপরেও বেশ কিছু বাড়িতে পানি জমে ছিল।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কিশোরগঞ্জে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় প্রবল বর্ষণ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি চলছিল।
শহরে নগুয়া এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান খান চৌধুরী সোহেল বলেন, দুইদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সড়ক তলিয়ে পানি ঘরে প্রবেশ করেছে। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাসা বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো: পারভেজ মিয়া বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভারী বৃষ্টির কারণেই শহরের কোথাও কোথাও পানি জমেছে। এগুলো দ্রুতই নেমে যাবে। আমরা সব এলাকাতে খোঁজ রাখছি।’
গতকাল রাত পর্যন্ত পানি জমে থাকতে দেখা গেছে জেলার সড়ক ও জনপদ, কর কমিশনারের কার্যালয়, ভোক্তা অধিকার কার্যালয়, জেলা মৎস অফিস, শিক্ষা অফিস, রেকর্ড রুম, ভূমি অফিস, সদর সার্কেলের কার্যালয়, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় ও শিশু একাডেমিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কার্যালয়ে। এসব কার্যালয়ের মধ্যে অনেক এলাকায় পানি নিষ্কাশনের নালা নেই। আবার কিছু এলাকায় নালা থাকলেও তা ভরাট হয়ে গেছে।
পৌরসভার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহর ঘেঁষে নদী থাকলেও কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলার কারণে প্রতিবছর এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
শহরের চর শোলাকিয়া এলাকারবাসিন্দা মো: ফারুকুজ্জাম গতকাল রাত ৮টায় এ প্রতিনিধিকে জানান, ‘২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৃষ্টিপাত চলছে। শুক্রবার বিকেলে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও সন্ধ্যার পর থেকে আবারো বৃষ্টি শুরু হয়। ঘর থেকে পানি এখনো নামেনি।
এদিকে বৃষ্টির কারণে জেলার হাওরেও পানি বাড়া শুরু হয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার প্রায় সব উপজেলাতে রোপা আমলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার ১৩ উপজেলায় পাঁচ শতাধিক মাছের খামার ভেসে গেছে।
বিপুল/০৬.১০.২০২৩/ সন্ধ্যা ৭.৫৬