
ডেস্ক নিউজ : ‘ছোট বেলায় খুব দুরন্ত ছিলাম। বাবা-মায়ের ভীষণ আদর আর ভালোবাসায় বড় হয়েছি। বিয়ের পর স্বামীর সংসারেও সুখীই ছিলাম। কিন্ত হঠাৎ স্বামী মারা গেলেন। এরপর ছেলে-মেয়েদের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকল। এক সময় বাধ্য হয়ে এই প্রবীণ নিবাসে এসেছি’ বলছিলেন অনামিকা নামের এক প্রবীণ।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রবীণ হিতৈষী নিবাসে দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলে-মেয়েদের পরিচয় দিয়ে তাদের ছোট করতে চাই না। সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদে দেখতে আসছিল ছোট ছেলে। কিন্ত কোন কথা বলিনি। কেবল নাতিটাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম। তারা চলে যাওয়ার পর একা একা একা অনেকক্ষণ কেঁদেছিলাম।
‘স্বামীর মৃত্যুর পর একে একে বড় মেয়ে ও দুই ছেলেকে বড় করলাম, বিয়ে দিলাম। মেয়েটা বিয়ের পর আমেরিকায় চলে যায়। সেখান থেকে আগে বছরে দু-একবার খবর নিলেও দুবছর ধরে একবারের জন্যও খবর নেয়নি। নিজে না খেয়ে যে দুই ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করলাম। দেশের সবচেয়ে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করালাম, সেই দুই ছেলে এসে আমাকে এই নিবাসে রেখে যায়’ কথাগুলো বলতে বলতে কাঁদছিলেন বৃদ্ধা অনামিকা।
বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে ওই মা বলছিলেন, ‘রাতে ঘুমোতে পারি না। বারবার ঘুম ভেঙে যায়। তখন নিজেকে খুব একা মনে হয়। ছেলেমেয়েদের মুখ দেখতে ইচ্ছে হয়। নাতি-নাতনিদের জড়িয়ে ধরে ঘুমোতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু আমার কপালে ঘুম, ছেলেমেয়ে কিংবা সংসার লেখা নেই। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনজন পর হয়ে যায়’।
কিউটিভি/আয়শা/০১ অক্টোবর ২০২৩,/বিকাল ৪:০৩