
ডেস্ক নিউজ : পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি উদ্ধার তৎপরতায় সহযোগিতা ও মানবিক কার্যক্রমে নৌবাহিনীর সদস্যরাও যুক্ত হয়েছেন। এরই মধ্যে নৌবাহিনীর ৩৫ সদস্যের একটি ডুবুরিদল দল সিলেটে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে।
শনিবার (১৮ জুন) থেকে বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনীও যুক্ত হলো।
সিলেটের জেলা প্রশাসনের মুখপাত্র ও সহকারী কমিশনার আহসানুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নৌবাহিনীর টিম চলে এসেছে। ৩৫ জনের একটি ডুবুরিদল কাজও শুরু করেছে। বিকেলে ৬০ জনের আরেকটি বড় দল আসবে। কোস্ট গার্ডের দুটি ক্রুজ দুপুরের পর আসবে। একটি সুনামগঞ্জ যাবে। আরেকটি সিলেটে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত হবে। এছাড়া বিমান বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার উদ্ধার কাজে নিয়োজিত থাকবে।
এর আগে শুক্রবার (১৭ জুন) সেনাবাহিনীর ৯টি ইউনিট সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত বিভিন্ন উপজেলায় উদ্ধার কাজ চালায়।
এদিকে, এখনো প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। আক্রান্ত মানুষের এখন প্রাণে বাঁচার আর্তনাদ। অনেকে গবাদি পশু রেখে প্লাবিত এলাকা ছাড়ছেন না। কিন্তু বন্যার পানি বৃদ্ধির কারণে মানুষের প্রাণ সংহার হতে পারে। আক্রান্ত বেশিরভাগ এলাকায় এখন শুকনো মাটিও নেই।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, নৌবাহিনীর সদস্যরা শনিবার সকালে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের সালুটিকরে অবস্থান নেন। এরপর সেখান থেকে উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন।
এরআগে জেলা প্রশাসকের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে শুক্রবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের ৯টি টিম সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৮টি উপজেলায় কাজ শুরু করে। ‘রেসকিউ বোট’ দিয়ে তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন।
১৭ পদাতিক ডিভিশন ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল হামিদুল হক এনএসডব্লিউসি, পিএসসি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সিলেটের ৩ উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ৫ উপজেলায় সেনাবাহিনী পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারসহ পাঁচটি কাজে তৎপরতা শুরু করেছে।
সিলেটের উপজেলাগুলো হচ্ছে সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ; সুনামগঞ্জ জেলার সদর, দিরাই, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও জামালগঞ্জ।
তিনি বলেন, সিলেট কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে বন্যার পানি উঠে বিদ্যুৎ সরবরাহ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি খাদ্য গুদাম ঝুঁকিতে রয়েছে। এগুলো রক্ষায়ও সেনা সদস্যরা কাজ করছেন। এছাড়া সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করা হচ্ছে। বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বন্যা আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান ও স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সীমিত পরিসরে খাদ্য সামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সিলেট নগরের ২৫ থেকে ৩০টি এলাকায় হু হু করে পানি বাড়ছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি এলাকায়। বাসাবাড়িতে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি। এদিকে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও সিলেট সদর উপজেলায়ও পানি বেড়ে চলছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
কিউটিভি/অনিমা/১৮.০৭.২০২২/বিকাল ৩.০৮