
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের ভুল স্বীকার করে জেলা কমিটির কাছে নিশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। এ অবস্থায় তাদেরকে পাঠানো কারণ দর্শানো নোটিশটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে উপজেলার দুই নেতা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে নিশর্ত ক্ষমা প্রার্থণা করেন। নোটিশের জবাব ছিলো সন্তোষজনক। পৌর ও কলেজ কমিটি নতুন করে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানানো হয় ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।এর আগে রবিবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে ছয়টি কমিটি ঘোষণা করে আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এর মধ্যে পৌর ও শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ কমিটি ঘোষণা করা গঠনতন্ত্র মোতাবেক উপজেলার এখতিয়ারভুক্ত নয়। এদিকে চট্টগ্রাম ট্রাজেডি নিয়ে সারা দেশের মানুষ যখন শোকাহত তখন এসব কমিটি ঘোষণা করা নিয়ে চাপা অসন্তোষও দেখা দেয়। সোমবার জেলা থেকে পৌর ও শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ কমিটি স্থগিত ঘোষণা এবং উপজেলা সভাপতি ও সম্পাদকে কারণ দর্শানোন চিঠি দেওয়া হলে বিষয়টি সর্বত্র আলোচনার খোরাক হয়ে দাঁড়ায়।
এ অবস্থায় কোনো ধরণের আনন্দ মিছিল না করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়। যে কারণে আখাউড়ার কোথাও ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আনন্দ মিছিল হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অভিনন্দন জানানোয় সীমাবদ্ধ থাকে নেতা-কর্মীরা। যদিও অনেকে ফুল নিয়ে ছুটে যান এক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায়। আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবউদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারন সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন নয়ন রবিবার রাতে পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলার ধরখার, মনিয়ন্দ, উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং পৌর ও শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ শাখার আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। আগামী তিনমাসের এসব কমিটি ঘোষণার কথা বলা হয়। ছাত্রলীগকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এসব কমিটি ঘোষণা করা বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। পৌর কমিটিতে নাইমুর রহমান রনি, কলেজ কমিটিতে আবু বক্কর আজমাইন, উত্তর ইউনিয়নে মোস্তাক ভূইয়া শাওন, দক্ষিণে নাঈম হাসান নীর, মনিয়নন্দে মশিউর রহমান রিমন, ধরখারে শাফায়েত রবিনকে আহবায়ক করা হয়। এসব কমিটির পরিধি ২৫ থেকে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয়রা যখন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ট্রাজেডিতে সেবামূলক কাজে ব্যস্ত ঠিক ওই সময়টাতে কমিটি ঘোষণার বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। তবে ছাত্রলীগের কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলে কিছু বলতে চাননি। এদিকে এসব কমিটিতে মাদক মামলার আসামী, অছাত্র রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ শুরু হয়েছে। এক ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়া নেতা ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন।জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো. শাহাদাৎ হোসেন শোভন দৈনিক কুইক নিউজ কে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুসারে ১ম শ্রেণির পৌরসভা ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়ার এখতিয়ার জেলা কমিটির। ওই দু’টি কমিটি উপজেলা সমমর্যাদার। এক্ষেত্রে উপজেলা কমিটি আমাদের সঙ্গে কোনো ধরণের পরামর্শ না করে এ দু’টি কমিটি দিলে উপজেলা সভাপতি ও সম্পাদককে কারণ দর্শাতে বলা হয়।’তিনি বলেন, ‘তাদের জবাব ছিলো সন্তোষজনক। ওই দু’টি কমিটি দেওয়ার এখতিয়ার যে তাদের নেই সেটি জানতেন না বলে জবাবে উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছেন। যে কারণে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। অচিরেই ওই দু’টি কমিটি জেলার মাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
কিউটিভি/অনিমা/০৮.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সকাল ১১:৩৩