
ডেস্ক নিউজ : কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকার বিদ্যালয়গুলো ক্রমেই হয়ে উঠছে অনিরাপদ ও অরক্ষিত। অনেক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর না থাকায় সন্ধ্যা হলে অবাধে বহিরাগতদের প্রবেশ, বখাটে ছেলেদের আড্ডা ও মাদকের আসর চলছে হর-হামেশাই। বিশেষ করে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে জমে এসব বখাটে মাদকসেবীদের আড্ডা। বখাটেরা আড্ডা ও মাদকসেবনের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল চুরি করে নিয়ে গেলেও নেই প্রশাসনের তেমন নজরদারি। এতে অনেকটা নিরুপায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্বজোড়কানন ইউনিয়নের লামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্ধ্যার পরপরই শুরু হয় বখাটেদের আড্ডা ও মাদকসেবন। প্রতিদিনই বখাটে মাদকসেবীরা বিদ্যালয়ের মাঠ, বারান্দা ও ছাদে মাদকের আসর বসাচ্ছে। বখাটেপনা রোধে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করলেও এগুলো ভেঙে ফেলাসহ বাতি না জ্বালাতে শিক্ষকদের হুমকি দেয় বখাটেরা। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের বারান্দার গেইট, গ্রিল ও ইলেকট্রিক তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেকটা নিরুপায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, এই স্কুল মাঠে অনেক খেলাধুলা হতো। এখন খেলাধুলা বন্ধের সুযোগে বসছে বখাটেদের আড্ডা। প্রশাসন স্বপ্রণোদিত হয়ে কখনও এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালায় না। কেবল আমরা ফোনে খবর দিলেই তারা আসে। অনেক সময় খবর পেয়েও আসে না।
লামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান উন্নয়ন, ছাত্র ছাত্রী বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন সহ সার্বিক উন্নতির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। বিদ্যালয়টি এলাকার সম্পদ। তবে, দুঃখের বিষয় রাত হলেই বিদ্যালয়টি বখাটেদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়। প্রতিদিন সকালে যখন বিদ্যালয়ে আসি, দেখতে পাই বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন, বারান্দায় ও ছাদে ময়লা আবর্জনা ও বিভিন্ন বস্তুর উচ্ছিষ্ট। তিনি এলাকাবাসী সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপও কামনা করেন। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রচীর ব্যবস্থা করার দাবি জানান প্রধান শিক্ষক।
পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন বলেন, প্রশাসনের সঠিক তদারকি না থাকায় বিদ্যালয়ে বখাটে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে। বিদ্যালয়ে প্রায়ই ঘটছে চুরির ঘটনা। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
সদর দক্ষিণ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, লামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েকটি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হবে। পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন তিনি। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে অবগত হয়েছি। বিদ্যালয়ের মালামাল চুরি ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
আয়শা/১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /বিকাল ৪:৫০