ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনে বিতর্কিতদের প্রশ্রয় : শংকিত জেলাবাসী গণতন্ত্রের জন্য চলা সংগ্রাম-লড়াই চালিয়ে যাব : মির্জা ফখরুল ঢাকায় এমপি প্রার্থী ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মমতাজ হোসেন লিপিকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে রৌমারীতে মশাল মিছিল আর্থিক অনিয়মে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামঃ অভিযোগের ঝড় খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজে কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু কুড়িগ্রামে পরপর ৬ ডিসির মধ্যে ৪ জনই নারী ডিসি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ গাজী মাজহারুল আনোয়ার : তুমি সুতোয় বেধেছ শাপলার ফুল নাকি তোমার মন ‘নবীন বরণ ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হলো ড্যাফোডিল পলিটেকনিকে

প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার নানা দিক

Anima Rakhi | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ - ০৬:২৯:৪২ এএম

ডেস্ক নিউজ : ইতিহাসের সূচনা থেকেই প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতা মানবজাতির সৃজনশীলতা ও কৃতিত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। নীল নদের তীরে গড়ে ওঠা এই সভ্যতা শুধু আফ্রিকা নয়, সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে এক স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। স্থাপত্য, চিকিৎসা, শিল্পকলা, জাদুবিদ্যা কিংবা দৈনন্দিন জীবনের শৈল্পিকতা—প্রতিটি ক্ষেত্রেই মিসরীয়রা ছুঁয়েছিল সাফল্যের শিখর। তাদের নির্মিত পিরামিড, মন্দির ও রাজকীয় সমাধি আজও মানব মেধা ও পরিশ্রমের বিস্ময়কর নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

সযত্ন মমিকরণ প্রক্রিয়া, খাঁটি সোনার অলংকার, বর্ণিল পোশাক এবং নিখুঁত কারুকার্য তাদের নান্দনিক রুচি ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার সাক্ষ্য দেয়। প্রাচীন মিসরীয়রা নীল নদের জলকে শুধু জীবিকার উৎস হিসেবেই নয়, সভ্যতার প্রাণশক্তি হিসেবে ব্যবহার করেছিল। সেই নদীই তাদের কৃষি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপন করেছিল। ফেরাউনদের গৌরব, তাদের স্থাপত্যের মহিমা ও শিল্পের সৌন্দর্য এখনো মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক অমর অধ্যায় হিসেবে টিকে আছে।

মূলত প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতা ফারাওদের নেতৃত্বে এমন সব স্থাপত্যকীর্তি নির্মাণ করেছিল, যা আজও বিশ্বকে বিস্মিত করে। গিজার গ্রেট পিরামিড (খুফু), রহস্যময় স্ফিংস, আবু সিম্বেল, কর্ণাক ও কালাবশার মহিমান্বিত মন্দিরগুলো ফারাওদের শিল্প প্রতিভা ও কারিগরি দক্ষতার জীবন্ত সাক্ষী। মিসরীয় মন্দির, শবাধার ও রাজকীয় সমাধিগুলো শুধু স্থাপত্যের দিক থেকে নয়, ধর্মীয় বিশ্বাস ও পরকাল ধারণার দিক থেকেও গভীর তাৎপর্য বহন করে। প্রতিটি দেয়ালে খোদাই করা হায়ারোগ্লিফিক লিপি, অলংকৃত চিত্রকর্ম ও সূক্ষ্ম নকশা প্রকাশ করে তাদের অদ্ভুত সূক্ষ্ম রুচি ও পরিপূর্ণতার প্রতি অনুরাগ।

এমনকি প্রাচীন মিসরীয়দের মৃত্যু ও পরকালের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা তাদের স্থাপত্যে যেন চিরস্থায়ী হয়ে আছে। মমি, ওবেলিস্ক, মন্দিরের স্তম্ভ এবং পিরামিডের নকশা আজও তাদের আধ্যাত্মিকতা ও বিজ্ঞানমনস্কতার মেলবন্ধনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। বিশ্বের প্রাচীনতম ও সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সভ্যতাগুলোর মধ্যে প্রাচীন মিসর অন্যতম, বিশেষ করে গিজার পিরামিড, যা শুধু প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার জন্য নয়, মানবসভ্যতার ইতিহাসে স্থাপত্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবেও অনন্য। প্রাচীন মিসরীয়দের তৈরি ওবেলিস্ক, হায়ারোগ্লিফিক লিপি ও চিত্র অঙ্কন তাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ইতিহাস নথিভুক্ত করার এক অনন্য মাধ্যম হয়ে আছে। তাই প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতা ইতিহাসের এক অমর অধ্যায়, যা যুগে যুগে মানবসভ্যতার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।

খ্রিস্টপূর্ব যুগে উদ্ভব হওয়া এই সভ্যতা হাজার হাজার বছর ধরে টিকে থেকে বিশ্ব ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অসংখ্য শাসক রাজবংশ তাদের রাজত্বের ছাপ রেখে গেছে এই ভূমিতে, আর ফারাওদের সেই মহিমাময় কীর্তি আজ কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে। পিরামিড, মন্দির ও স্ফিংসের মতো শ্বাসরুদ্ধকর স্থাপত্য শুধু ইতিহাসের নিদর্শন নয়, এগুলো মানব মেধা ও শ্রমের এক অনন্য প্রতীক, যা প্রত্নতত্ত্বের জগতে এখনো আইকন হিসেবে বিবেচিত।  নীল নদ, এই সভ্যতার প্রাণস্পন্দন, ছিল এর বিকাশ, সমৃদ্ধি ও ধারাবাহিকতার প্রধান ভিত্তি। নদীটির কল্যাণেই মিসর পরিণত হয়েছিল এক স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী ভূখণ্ডে। প্রাচীন মিসরের প্রতিটি স্মৃতিস্তম্ভ যেন এক একটি শিল্পকর্ম, যা আজ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাদুঘরগুলোতে স্থান পেয়েছে এবং সমগ্র মানবজাতিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছে।

এখনো প্রত্নতত্ত্ববিদরা মিসরের বালুর নিচ থেকে নতুন নতুন রহস্য ও উদ্ভাবন উন্মোচন করছেন, যা এই সভ্যতার আকর্ষণ ও রহস্যময়তাকে আরো গভীর করে তুলছে। সুতরাং প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতা শুধু ইতিহাস নয়, এটি এক অনন্ত বিস্ময়ের উৎস, যেখানে সৃজনশীলতা, বিশ্বাস ও সৌন্দর্য একসঙ্গে মিশে গড়ে তুলেছে এক অমলিন ঐতিহ্য, যা কখনোই একঘেয়ে নয়, বরং চিরকাল মুগ্ধতায় ভরপুর।

 

 

অনিমা/১৬ নভেম্বর ২০২৫,/সকাল ৬:২৯

▎সর্বশেষ

ad