
ডেস্ক নিউজ : মাওলানা শরিফ হাসান শাহীন
فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব। (সুরা বাকারা:১৫২) অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই হৃদয় প্রশান্ত হয়। (সুরা রাদ:২৮) জিকির শুধু জবান চালানো নয়; এটি হৃদয়ের পরিশুদ্ধি, আত্মার জাগরণ এবং ঈমানের শক্তি সঞ্চয়ের মাধ্যম। নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতকে কিছু সংক্ষিপ্ত অথচ অপরিসীম ফজিলতপূর্ণ জিকির শিখিয়েছেন। আজ আমরা তন্মধ্যে চারটি জিকির সম্পর্কে জানব, যেগুলোর প্রতিটি বান্দার জীবনে বরকত, শান্তি ও আল্লাহর নিকটতা বয়ে আনে।
১. أستغفرُ الله (আস্তাগফিরুল্লাহ) আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
وَمَن يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا اللَّهُ আল্লাহ ছাড়া কে আছেন যিনি গুনাহ ক্ষমা করবেন? (সুরা আল ইমরান:১৩৫) নবীজি করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তার প্রতিটি দুঃখ দূর করেন, প্রতিটি সংকট থেকে মুক্তির পথ করে দেন এবং অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে রিজিক দান করেন। (ইবন মাজাহ:৩৮১৯) তিনি নিজে প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার ইস্তেগফার করতেন। (সহিহ বুখারি:৬৩০৭)
১.গুনাহ মাফ হয় ২.রিজিক বৃদ্ধি পায় ৩.দুঃখ-কষ্ট দূর হয় ৪.অন্তরে প্রশান্তি আসে। ২. اللهم صل على محمد وعلى آل محمد হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তার পরিবারবর্গের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন।
আরেক হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি বেশি দরুদ পাঠ করে, কিয়ামতের দিন সে আমার নিকটবর্তী হবে। (সুনানুত তিরমিজি ৪৮৪)
৩. يا حي يا قيوم (ইয়া হাইয়্যু ইয়্যা ক্বইয়্যূম) হে চিরঞ্জীব ও সর্বাধারক আল্লাহ!
يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ، بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ হে চিরঞ্জীব ও সর্বাধারক! তোমার রহমতের মাধ্যমে আমি সাহায্য চাই। (সুনানুত তিরমিজি:৩৫২৪)
১. বিপদ ও দুঃসময়ে সাহায্যের উৎস ২. কাজের বরকত বৃদ্ধি ৩. দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে ৪. يا ذا الجلال والإكرام (ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম) হে মহিমা ও দয়ার অধিকারী আল্লাহ!
এটি এমন এক নাম যা আল্লাহর মহিমা ও করুণা উভয়কেই প্রকাশ করে। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা يا ذا الجلال والإكرام বলো; এই নামের মাধ্যমে দোয়া করলে তা কবুল হয়। (সনানুত তিরমিজি ৩৫৪৪) অন্য হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি এই নাম দ্বারা আল্লাহকে ডাকে, ফেরেশতারা তার জন্য রহমত প্রার্থনা করে। (বায়হাকি, দা’ওয়াতুল কবির)
১. দোয়া কবুল হওয়া ২. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ৩. অন্তরে বিনয় ও ভক্তি বৃদ্ধি
জিকির হলো ঈমানদারের জীবনের আলো, আত্মার প্রশান্তি ও দুঃখের ওষুধ। যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা, অফিসে বা পথে এই চারটি জিকির করে, সে আল্লাহর নিকট বর্তি হয়ে যায়, তার অন্তর নরম হয়, গুনাহ দূর হয় এবং জীবনে আসে অফুরন্ত বরকত। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এই চারটি জিকির নিয়মিত করার তাওফিক দিন এবং এর মাধ্যমে আমাদের অন্তরগুলোকে পরিশুদ্ধ করে দিন। আমিন।
আয়শা/৩০ অক্টোবর ২০২৫,/বিকাল ৫:৪০
 
 






