জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কালীরহাটে অবস্থিত কালীরহাট প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি নানা অনিয়মের কারণে বেশ সমালোচিত। লালমনিরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদের ছত্রছায়ায় থেকে প্রতিষ্ঠাতা বাবলু আহমেদ কালীরহাট প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী নিয়োগে কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ এবং শিক্ষক পদের জন্য দেওয়া ৮লক্ষ টাকা ফেরত চাইলেও টাকা না পেয়ে উল্টো হুমকি পেতে হয়েছে মনিরুজ্জামান নামের শিক্ষককেও। এমনই অভিযোগ তুলে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লালমনিরহাট জেলা শহরের ক্যান্টিন মোড়ের একটি হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষক শিক্ষক মনিরুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে কালিরহাট প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বাবলুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি। লিখিত বক্তব্য শিক্ষক মনিরুজ্জামান জানান, কালীরহাট প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই অত্র প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাতা মোঃ বাবলু আহমেদের সাথে আট লক্ষ টাকা চুক্তিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা হয় তার। পরবর্তীতে ২২ নভেম্বর ২০১৩ সালে মনিরুজ্জামানের বাড়ীতে বাবলুকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। সে পেক্ষিতে বাবলু আহমেদ গত ২৭নভেম্বর২০১৩ সালে মনিরুজ্জামানকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। নিয়োগের তিনমাসের মধ্যে বাবলুকে অবশিষ্ট ৩লক্ষ টাকাও দেয় মনিরুজ্জামান বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
শিক্ষক মনিরুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, আমাকে স্থায়ীভাবে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ার পরেও মাঝে মধ্যে ৫-১০ হাজার টাকা দিতে হতো প্রতিষ্ঠাতার হাতে। শিক্ষক মনিরুজ্জামানের বেতন হবে বলে ১২ বছর অতিক্রম হলেও বেতন হয়নি। নতুন করে বিদ্যদলয়ের ভবনের অজুহাত সভাপতি আরো টাকা দাবি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পূর্বে দেওয়া টাকা ফেরত চায় সে। এতেই বাধে বিপত্তি। ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা এবং হুমকি দেওয়া হয় শিক্ষক মনিরুজ্জামানকে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি। পরে গ্রাম্যভাবে বিষয়টি আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা ও পরে উকিল নোটিশের মাধ্যমে টাকা ফেরত চাইলেও মনিরুজ্জামান পায়নি কেনো সুরাহা।
বর্তমানে কালীরহাট প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে শিক্ষকসহ অন্তত ৮৫ জন স্টাফ থাকলেও কেউ বেতনভুক্ত নয়। সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত থাকায় এলাকায় কেউ প্রতিবাদের সাহস পায়নি দীর্ঘদিনেও। বর্তমানে বংশীয় প্রভাব থাকায় টাকা ফেরত চাইলেও এলাকাছাড়া করাসহ নানা হুমকি পেতে হচ্ছে মনিরুজ্জামানকে বলে উল্লেখ করেন তিনি। উক্ত বিষয়টিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজর ও নিজের টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতা প্রত্যশা করে বক্তব্য দেয় মনিরুজ্জামান। এসময় দূর্ণীতি দমন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শিক্ষক মনিরুজ্জামান। বর্তমানে অসহায় মনিরুজ্জামান নিরাপদে জীবিক নির্বাহের জন্য ভিন্ন জেলায় একজন গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
কিউটিভি/আয়শা/১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/সন্ধ্যা ৬:২১