আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ইসলামাবাদে সুষ্ঠু বিচার চেয়ে করা এক পিটিশনের শুনানিকালে এই নির্দেশ দেন ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্টের বিচারক বসির জাভেদ রানা। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
আল–কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সুষ্ঠু বিচারের অনুরোধ জানিয়ে একটি পিটিশন দায়ের করেন ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ইসলামাবাদে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্টে পিটিশনের শুনানি হয়। ওই শুনানিকালে বিচারক ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথা বলার নির্দেশ দেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ইমরান খান সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক রাজনৈতিক বিবৃতি দিয়েছেন। এমন বিবৃতি শুধু বিচার বিভাগের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেনি বরং ন্যায়বিচার প্রদানের মতো বিচারিক কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত করেছে।
আদালতের মর্যাদা হানি করতে পারে এমন রাজনৈতিক বা উসকানিমূলক বিবৃতি দেয়া থেকে বিরত থাকতে ইমরান খান ও তার স্ত্রী এবং তাদের পক্ষের আইনজীবীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে আদালত। এছাড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও এর কর্মচারীদের নিশানা করে দেয়া রাজনৈতিক ও উত্তেজনামূলক বক্তব্য প্রকাশ করা থেকে সংবাদকর্মীদের বিরত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন বিচারক।
জনপ্রিয় ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক ইমরান খান ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। মেয়াদ পূর্ণ করার আগে ২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধীদের অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। এরপর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দেয়া হয়।
এর মধ্যে একাধিক মামলায় ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি কারাগারে রয়েছেন। ইমরান খানকে প্রথম কারাদণ্ড দেয়া গত বছর তথা ২০২৩ সালের আগস্টে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রীয় উপহারের সাথে জড়িত একই অভিযোগে খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয় হয়।
এছাড়া ৪৯ বছর বয়সী বুশরা বিবিকে দুর্নীতি ও ইমরান খানের সঙ্গে ‘অবৈধ’ বিয়ের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছ। বর্তমানে তিনি রাজধানী ইসলামাবাদে ইমরান খানের বাসভবন বানি গালায় গৃহবন্দি রয়েছেন। শুরু থেকেই এসব মামলাকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করে আসছেন খান। সেই সঙ্গে তাকে প্রায়ই আদালত থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী- সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কঠোর সমালোচনা করতে দেখা যায়।
সম্প্রতি (১৭ এপ্রিল) আদিয়ালা জেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন ইমরান খান। সে সময় স্ত্রী বুশরা বিবির ব্যাপারে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে হুঁশিয়ারি দেন ইমরান খান। বলেন, তার স্ত্রী বুশরা বিবির কারাদণ্ডের জন্য সরাসরি দায়ী সেনাপ্রধান আসিম মুনির।
এরপর এক এক্স বার্তায় ইমরান খান বলেন, আমার স্ত্রীকে অভিযুক্ত করার সঙ্গে সরাসরি জড়িত জেনারেল আসিম মুনির। (আল্লাহ না করুক) আমার স্ত্রীর কোনো ক্ষতি হলে আমি আসিম মুনিরকে ছাড়ব না। আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি, আমি তার পিছু ছাড়ব না। তার অসাংবিধানিক ও বেআইনি সব কাজ ফাঁস করে দেব।
কিউটিভি/আয়শা/২৬ এপ্রিল ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:২৫