
এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন চাষ সফলতা পেয়েছেন কৃষক জুলফিকার আলী। তিনি ৫ কাঠা জমিতে জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন চাষ করে সফল হয়েছেন। উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের হিজলী গ্রামের বাসিন্দা চাষী জুলফিকার আলী।
এ ফল ক্ষেতের পাশ দিয়ে কেউ হেটে গেলে মনে হবে গাছে ধরে আছে আপেল কিংবা গাব। কিন্তু নিকটে গেলে বোঝা যাবে এই দুটোর কোনটিই নয়, এটা অন্য ফল। বাংলাদেশের মাটিতে এখন চাষা হচ্ছে জাপানেরজাতীয় ফল পার্সিমন। উপজেলার হিজলী গ্রামের চাষী জুলফিকার আলী তার ৫ কাঠা জমিতে জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন চাষ করেছেন। ৭ বছর পর এবারই প্রথম ফল ধরেছে। তার ক্ষেতে থুকায় থুকায় ঝুলে থাকা এ নতুন ফল দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন অনেক মানুষ আসছেন। কৃষি উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য কর্মকর্তারা রাশেদুল ইসলাম বলেন, তারা নানাভাবে জুলফিকার আলীকে পরামর্শদিচ্ছেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জাপানের নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলায় প্রায় দুই লাখ অধিবাসী –অধ্যুষিত নগরটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। কিছুদিনের মধ্যেই সেই বিরানভূমিতে যে উদ্ভিদ আবারো কুঁড়ি ফুটিয়ে পুনরায় জীবনের সূচনা করেছিল, সেটি ছিল পার্সিমন-বর্তমান জাপানের জাতীয় ফল। পার্সিমন ভিটামিন, আয়রণসহ নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর খুব মিষ্টি এবং রসাল একটি ফল।
চাষী জুলফিকার আলী জানান, সাত বছর আগে নাটোর জেলা হর্টিকালচার থেকে ৩০টি পার্সিমনের চারা কিনে এনে পাঁচ কাঠা জমিতে লাগান। সাত বছর ধরে পরিচর্যা করে ২০২৩ সালে গাছে ফল এসেছে। ফলটি দেখতে যেমন সুন্দর খেতে ও বেশ সুস্বাদু। তিনি এ গাছ থেকে ইতি মধ্যে চারা তৈরী করে বিক্রি শুরু করেছেন। এলাকার অনেক কৃষক এ ফল চাষে এগিয়ে আসছেন। ফলটি দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের টমেটো ও গাবের মতো। গায়ের রং কমলা ও হলুদ রঙের মিশ্রণে দারুণ এ ফল প্রত্যেটি গাছের ডালে-ডালে থুকায়-থুকায় ধরে ঝুলছে। দেখলে চোখ ফেরানো যায় না। ওজনে কেজিতে ৬/৭ টি ফল হয়। ফলটি কাটলে ভিতরে পাকা টমেটার মতোই দেখতে। ফলটির ভেতরে বীজ নেই বললেই চলে। এ ফলটি পরিপূর্ন ভাবে পাকলে বাকলও খেতে দারুণ সুস্বাদু।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চাঁদ আলী বলেন, জুলফিকার আলীর বন উন্নয়ন নামে একটি নার্সারী রয়েছে। তিনি বিভিন্ন দেশের উন্নত জাতের নতুন ফলের চারা, বীজ ও গাছ সংগ্রহ করে প্রথমে নার্সারীতে মাদার গাছ তৈরী করেন। পরে সেই মাদার গাছ থেকে চারা উৎপাদন করে নিজে নতুন জাতের আবাদ করেন ও চারা বিক্রি করে থাকেন। জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন তেমনই একটি নতুন জাতের ফল। আমাদের এলাকায় এটা একে বারেই প্রথম চাষ হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসাইন বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নতুন জাতের ফলে চাষ করা চাষিদের সব সময় পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে থাকি। জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন চাষী জুলফিকারকেও সব সময় বিভিন্ন পদ্ধিতি ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।
কিউটিভি/আয়শা/৩১ অগাস্ট ২০২৩,/সন্ধ্যা ৭:০৮