হবু মায়ের ডায়াবেটিসে যা খেতে হবে

Ayesha Siddika | আপডেট: ১১ মে ২০২৩ - ০৯:২৫:১৪ পিএম

লাইফস্টাইল ডেস্ক : গর্ভকালীন ডায়াবেটিস দু-ধরনের হতে পারে। একটি হলো যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস (টাইপ ১ বা টাইপ ২) থাকে এবং যারা গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস আক্রান্ত হন। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে পুরুষের তুলনায় নারীদের ঝুঁকি বেশি থাকে। কেননা ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

সাধারণত গর্ভকালীন বা জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার হার বেড়ে যায় এবং সন্তান প্রসবের পর তা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, গর্ভাবস্থায় শরীর অতিরিক্ত চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরি করত না পারলে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই বিষয়ে গবেষকরা আরও জানান, গর্ভাবস্থায় যে কোনো সময়ে এটি দেখা গেলেও গর্ভধারণ করার প্রথম তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে এই ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট লক্ষণ নেই। তবে নারীর রক্তে শর্করার হার অতিরিক্ত বেড়ে গেলে কয়েকটি লক্ষণ দেখা যেতে পারে। এগুলো হলো তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া, সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি মাত্রায় প্রস্রাবের বেগ পাওয়া,ঘন ঘন মুখ শুকিয়ে যাওয়া,দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এসব লক্ষণ দেখা গেলে সময় নষ্ট না করে প্রয়োজনীয় টেস্ট করে নিতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

সুগার লেভেল ঠিক করার জন্য এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এসময় নারীরা যেসব খাবারের অভ্যাস করতে পারেন তাহলো রঙিন শাক সবজি ও তাজা ফলমূল। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, ভিটামিন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তে শর্করার মাত্রা না বাড়িয়ে দ্রুত শরীর দ্বারা শোষিত হতে পারে।

এ ছাড়া আপনি খেতে পারেন আখরোট। আখরোটে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে এবং ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানের পাশাপাশি শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনি রান্নায় আদা আর হলুদের ব্যবহার বাড়িয়ে দিতে পারেন। কারণ হলুদে থাকা অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধিসহ নানা রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

এতে থাকা কারকিউমিন অগ্ন্যাশয়ের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে ইনসুলিনের মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে। আর আদাতে থাকা  প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরির বৈশিষ্ট্য রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে। তাই নিয়মিত এইসব খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেতে পারেন বিভিন্ন ধরনের তৈলাক্ত মাছ।  কারণ এতে থাকা  ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা, লিপিডের মাত্রা উন্নত করে এবং হরমোনের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করে।
তবে চিকিৎসকরা মনে করে এই সব খাবারের পাশাপাশি দূর করতে হবে মানসিক দুশ্চিন্তা। আর নিয়মমাফিক হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করার অভ্যাসই এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, বিবিসি নিউজ

কিউটিভি/আয়শা/১১ মে ২০২৩,/রাত ৯:১৯

▎সর্বশেষ

ad